
দেশব্যাপী পরিচালিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা, সম্মানী, উপবৃত্তি ইত্যাদি নগদ অর্থ ব্যাঙ্ক অথবা মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হতে উত্তোলনে একটি অভিন্ন ক্যাশ আউট চার্জ নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে এই সব কর্মসূচিতে টাকা পাঠাতে হলে প্রতি ১০০ টাকায় ক্যাশ আউট চার্জ কর্মসূচি ভেদে ৬০ পয়সা থেকে এক টাকা ৮৫ পয়সা পর্যন্ত দিতে হয় মোবাইল ফোন অপারেটরদের। কিন্তু সরকার এই চার্জ কমিয়ে সব কর্মসূচির ক্ষেত্রে অভিন্ন ৭০ পয়সা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর ফলে এই কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় প্রায় শত কোটি টাকা কমে যাবে বলে জানা গেছে।অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের এই সেবা ব্যয় পরিশোধ কার্যক্রম পরিচালনা ও মনিটরিংয়ের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা আহ্বান করা হয়। অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
তবে মোবাইল অপারেটররা এটি মানতে রাজি হচ্ছে না বলে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান। তিনি জানান, মোবাইল অপারেটররা বলছে, এই খরচ যেন এক টাকা ৭৫ পয়সা করা হয়। তা না হলে তাদের লোকসান দিয়ে ব্যবসা করতে হবে। কিন্তু অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই খরচ কোনোভাবে সর্ব্বোচ্চ এক টাকার বেশি আরোপ করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে খুব শিগগির এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রকাশ করা হবে।এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক যুগ্ম সচিব বলেন, বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন ধরনের প্রায় অর্ধশত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচির মধ্যে অনেকগুলো কর্মসূচির অর্থ আবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়ে থাকে। এই মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা উপকারভোগীদের কাছে পাঠানো হয়। যদি ক্যাশ আউট চার্জ অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায় সেক্ষেত্রে সরকারের খরচ কম হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। কারণ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীদের সব ক্যাশ আউট খরচ সরকার বহন করে থাকে।
প্রসঙ্গত, চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে মাধ্যমিক স্তরে ৫.৫৭ লাখ ছাত্র, ১০.৯৫ লাখ ছাত্রী, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ১.১৬ লাখ ছাত্র, ৪.৬২ লাখ ছাত্রী এবং ডিগ্রি স্তরে ৫০ হাজার ছাত্র ও ১.৫০ লাখ ছাত্রীকে উপবৃত্তি দেয়া হবে। পাশাপাশি, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে এবং এই অর্থ বছরে আরো এক লাখ ৮৭ হাজার শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হবে।